প্রকাশিতঃ ২৪ এপ্রিল ২০২০
সময়ঃ রাত ৮ঃ০০
রামাদান রুটিন : ১৪৪১হিজরি
এই রুটিনটি তৈরী করেছেন শাইখ আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ। আল্লাহ শাইখকে এর উত্তম বিনিময় দান করুন।
রামাদানে সবার একটা রুটিন থাকা উচিৎ। তাতে করে কিছু না করলেও বুঝা যায়, কি করিনাই! আর একটা অনুভূতির তাড়া সাথে থাকে। এটি নমুনা হিসেবে উপস্থাপন করছি।
- ২:৩০-২:৪০ → ঘুম থেকে উঠা, দুয়া, টয়লেট, ওযু।
- ২:৪০-২:৪৫ → তাহ্যিয়াতুল ওযুর ২ রাকাত নামাজ।
- ২:৪৫-৩:২৫ → তাহাজ্জুদের (কিয়ামুল লাইল২/৪/৬/৮- রাকাত) নামাজ।
- ৩:২৫-৩:৪০ → দুয়া-মুনাজাত।
- ৩:৩৫-৩:৫০ → সাহরী করা।(আনুসংগিক-বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফোন করা। (খেতে এত সময় লাগে তাই টাইম ভেংগে দিলাম)
- ৩:৫০→ ফজরের আযান পর্যন্ত কুরআন পড়া অথবা ইস্তিগফার করা। এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো ইস্তেগফার। এটি তাহাজ্জুদ এবং তারাবিহ থেকে ভিন্ন ধরনের ইবাদত। . . শেষ রাতে বা ফজরের আগে ইস্তেগফার সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা কর। তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।[আলি ইমরান:১৬-১৭]
- ৩:৫০- ৪:৩০/৫:৩০ → ফজরের নামাজ, জিকির, কোরআন তিলাওয়াত। সম্ভব হলে এশরাক পর্যন্ত জেগে থাকবেন। এখন যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন, অফিস ছুটি তাদের এটা প্রাকটিস জরুরী। তারপর ঘুমান আর যদি সকালে কাজ থাকে তবে নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে যেতে পারেন।
- ৯:০০-৯:১৫ → ঘুম থেকে উঠা, টয়লেট, ওযু, তাহ্যিয়াতুল ওযুর নামাজ। যারা ইশরাক/দুহা না পড়ে শুয়েছেন তারা পড়ে নিতে পারেন।
- ৯:১৫-১:০০→ যারা বাইরে কাজ করবেন তারা কাজে চলে যাবেন। যারা বাসায় থাকবেন তারা বাসার কাজ সেরে (ছেলেরা রান্না-বান্নায় ১ ঘন্টা সময় দিতে হবে) অন্তত ১ ঘন্টা কুরআন তিলাওয়াত করা যায়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইস্তেগফার, জিকির করতে থাকবেন। শুরুতেই বলেছি এবারে আমরা ভিন্ন রকম ভাবে রমাদানকে পালন করতে যাচ্ছি। আল্লাহ তায়ালার বিশাল এক নিয়ামত হলো অবসর। এই পবিত্র মাসে! সুবহানাল্লাহ, ইবাদত করার অনেক বড় এক সুযোগ পেয়েছি তাই কাজে লাগাই।
- ১:০০-১:৪৫- যোহরের সালাত
- ১:৪৫-২:১৫ → কুরআন তিলাওয়াত।
- ২:১৫-৩:৩০ → দ্বীনি ইলম অর্জন, বাড়ির সবাইকে নিয়ে তালিমে বসা, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, দুয়া,(একমাস কি পড়ব, কি মুখস্ত করব তার আলাদা ত্রিশ দিনের রুটিন করতে হবে) ইত্যাদি।
- ৩:৩০-৪:৩০ → দুপুরের ঘুম।
- ৪:৪৫-৫:১০ → আসরের সালাত।
- ৫:১০-৫:৫০→ মাসনুন জিকির, কোরআন তিলাওয়াত, দুয়া করা।
- ৫:৫০-৬:২৫→ ইফতারি তৈরি/ তৈরিতে সাহায্য করা। ৬:২৫-৬:৩০→ দুয়া
- ৬:৩০-৭:১৫→ ইফতার, মাগরীবের সালাত(সালাতের পরের মাসনুন ওযীফাসহ)
- ৭:১৫-৮:০০→ বিশ্রাম। এই সময় নেট চালানো, লেকচার, কোরআন তিলাওয়াত শোনা যেতে পারে।
- ৮:০০-১১:০০ → এশার সালাত, তারাবীহ্। প্রত্যেক ওয়াক্ত যদি সম্ভব হয় অবশ্যই বাড়ির মাহরাম নারী-পুরুষ জামাআতে আদায় করার চেষ্টা করুন। মেয়েদের জামাতে সালাত আদায়ের সিস্টেম বলে রাখুন। যে কয়েকটি সুরা মুখস্থ আছে সেগুলো দিয়েই পড়ুন।
- ১১:০০-১১:১৫ → কুরআন তিলাওয়াত। যেটুকু ভালো লাগে।
- ১১:১৫-১১:৩০ → ঘুমের প্রস্তুতি।
- ১১:৩০→ ঘুম।
এই রুটিনটা একটা খসড়া রুটিন। যার যার সুবিধামত একে পরিবর্তন করে নিতে পারেন। সবার সাথে টাইমিং না মিললেও আমলগুলো নিজের শিডিউলে যুক্ত করুন। আমাদের দুনিয়াবি ব্যস্ততা নেই বললেই চলে। করোনা পরিস্থিতির জন্য জীবনের এক ব্যাতিক্রম রমাদান আমাদের। দান খয়রাত শিডিউলে যুক্ত করিনি, নিজেদের করে নিতে হবে, ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে রুটিনে চলা সম্ভব নয়, কিন্তু রুটিন ছাড়া খাপছাড়া সময়ও কাম্যনয়।
আল্লাহ্ তা'য়ালা আমাদেরকে রামাদানের হক যথাযথভাবে আদায় করার তৌফিক দিন।